দেশের হবু আমলাদের শীর্ষ তালিকায় জায়গা করে নিলেন বাংলার দুই মেধাবী সন্তান। মঙ্গলবার ইউপিএসসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। জাতীয় তালিকায় ১৩ নম্বরে রৌনক আগরওয়াল ও কুড়ি নম্বরে আছেন নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনেই কলকাতার। দু’জনেই পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের আমলা হিসাবে কাজ করতে চান। আইআইটি খড়গপুরের ইঞ্জিনিয়ার নেহা প্রথমবার পরীক্ষা দিয়েই চমক দিয়েছেন। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট রৌনকের সাফল্য এসেছে তৃতীয়বারে। বাংলার সাফল্য এবার চমকে দেওয়ার মতোই। এভাবে প্রথম কুড়িতে দুই বঙ্গজের স্থান পাওয়ায় শীর্ষ আমলারা মনে করছেন, প্রশাসনে কাজে যোগ দেওয়ার আগ্রহ বাড়ছে।




যাদবপুরের নেহা কারমেল থেকে মাধ্যমিক ও সাউথ পয়েন্ট স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন। এরপর আইআইটি খড়গপুরে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা। নয়ডায় একটি বহুজাতিক সফটওয়্যার সংস্থায় চাকরি করতে করতে প্রস্তুতি নিয়েছেন নেহা। সবচেয়ে আশ্চর্যের কলকাতার এই মেধাবী ছাত্রী ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য কোনও কোচিং নেননি। লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে চূড়ান্ত শীর্ষ তালিকায় তাঁর নাম আসার পর নেহা জানিয়েছেন, “এটা ঠিকই ইউপিএসসি-তে আসন সংখ্যা কম। তবে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়। আমি শুধু পরীক্ষা দিয়েছি। ফল নিয়ে একবারও ভাবিনি। কোথাও কোচিং নিইনি। ইউটিউবে ইউপিএসসি-তে সফল হওয়া আমলাদের ভিডিও দেখতাম। সুযোগ পেলে আমি অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের ক্যাডার হিসেবে কাজ করব।


পুজোয় বন্ধুদের সঙ্গে ঢাক বাজান রৌনক। চায়ের দোকানে আড্ডাও দেন। সেই ছেলেই ইউপিএসসি পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম হয়েছেন। উত্তর কলকাতার বিডন রো-র বাসিন্দা রৌনক ছাত্রাবস্থা থেকেই মেধাবী। ২০১১ সালে উচ্চমাধ্যমিকে বাণিজ্য বিভাগে প্রথম হয়েছিলেন। কলকাতার টাউন হলে অন্যদের সঙ্গে তাঁকেও পুরস্কৃত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন ইউপিএসসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর রৌনক জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সেই অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন আইএএস এবং আইপিএস অফিসার ছিলেন। সেদিনই প্রথম আইএএস হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম।” সেন্ট লরেন্স স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক দিয়ে বাণিজ্যে প্রথম হয়েছিলেন রৌনক। তারপর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক। এরপর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি পাশ করেন। একটি বহুজাতিক ব্যাংকে চাকরিও পান। কয়েক মাস পরে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ইউপিএসসি-র প্রস্তুতি শুরু করেন। ২০১৭ ও ২০১৮ দু’বার পরীক্ষা দিয়েও সাফল্য আসেনি। ২০১৯-এর ইউপিএসসি সাফল্য এনে দিয়েছে উত্তর কলকাতার মেধাবীকে। তিনি জানিয়েছেন, “পরীক্ষা ভাল হয়েছিল। কিন্তু এত ভাল ফল হবে আশা করিনি। সুযোগ পেলে আমি পশ্চিমবঙ্গের জন্য কাজ করতে চাই।